রোববার দুপুরে ভেঙ্গে দেয়া ওই প্রেসক্লাবের ধ্বংসস্তুপের সামনে দাড়িয়ে সাংবাদিকরা মানববন্ধন সমাবেশ করেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, চিলাহাটি-হলদীবাড়ী রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহীম তার দূর্নীতি ঢাকতে কোনো নোটিশ ছাড়াই সরকারি ছুটির দিনে গত ২৭ জুন শুক্রবার দুপুরে বুলডোজার দিয়ে প্রেসক্লাব অফিস এবং সংলগ্ন যুবলীগ অফিস ভেঙে দেন। এসময় রেলের কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা রেল পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে তিনি ব্যক্তি আক্রোশ থেকে এ কাজটি করেন। বক্তারা ওই কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও অপসারণ দাবী করেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. তোজাম্মেল হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসুচিতে একাত্বতা প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন, নীলফামারী জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাহমিন হক, সাধারণ সম্পাদক হাসান রাব্বি প্রধান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিল্লাদুর রহমান, প্রথম আলো প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান, ভোগডাবুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান বকুল, চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মো. মাহাবুবুল আলম ওহাবুল, সদস্য এ আই পলাশ, আহসানুল কবির জুয়েল, মোকাদ্দেস হোসেন লিটু প্রমুখ।
চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. তোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ করে বলেন,‘ চিলাহাটি -হলদীবাড়ী রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নির্মাণ কাজের সময় বিনা দরপত্রে রেললাইনের ধারে থাকা শতবর্ষি বেশ কিছু গাছ কেটে আত্মসাৎ করেছেন। প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের অনিয়মের বিষয়ে তথ্য চাইলে তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে খারাপ ভাষায় কথাও বলেছেন। তারই অংশ হিসেবে গত ২৭ মে শুক্রবার দুপুরে বুলডোজার দিয়ে চিলাহাটি প্রেসক্লাব অফিসটি ভেঙে দেন। এসময় কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা রেল পুলিশের কোনো সদস্য ছিলেন না।
চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মো. মাহাবুবুল আলম ওহাবুল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে প্রেসক্লাবের ভবন করে আছি। সেটি রেলের যায়গা ঠিক আছে। কিন্তু তাদের প্রয়োজনে উচ্ছেদ করতে চাইলে আমাদের নোটিশ করতে পারতেন। তিনি আমাদের মৌখিকভাবেও জানাননি। আমাদের জানানো হলে আমরা সেটি সরিয়ে নিতাম।
ভোগডাবুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান বকুল বলেন, ‘চিলাহাটি-হলদীবাড়ী রেল লাইন নির্মাণের সময় রেল লাইনের ধারে অসংখ্য স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। ওই কাজে স্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করেছেন। এখনো অসংখ্য বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রেলের জায়গায় আছে। অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করতে হলে স্থাপনা সংশ্লিষ্ঠদের নোটিশ করার নিয়ম আছে। এসব নিয়মের তোয়াক্কা না করে আব্দুর রহীম চিলাহাটি প্রেসক্লাব ও ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যালয়টি ভেঙে দিয়েছেন। এটা আইনসঙ্গত হয়নি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বললে, সাংবাদিকদের করা অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে রেলের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহীম বলেন,‘আমার ব্যাক্তিগত কোনো আক্রোশ নয়। আমি ভবন ভাঙিনি। রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভাঙা হয়েছে। তারা সেখানে বৈধভাবে না থাকার কারনে তাদের অবগতি বা নোটিশ করার প্রয়োজন হয়নি। আরো যদি কেউ রেলের জায়গায় অবৈধভাবে থেকে থাকেন তাদের তালিকা পাওয়া গেলে সেগুলোও অপসারণ করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।